বৈষ্ণব নগর

প্রাক্তন প্রেমিকের হাতে খুন হওয়া মালদহের ছাত্রী সুতপার শেষকৃত্য সম্পন্ন হলো রাজনগর শ্মশানে

মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর শহরে প্রাক্তন প্রেমিকের হাতে খুন হওয়া মালদহের ছাত্রীর মৃতদেহ গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ বহরমপুর থেকে আনা হয় তার গ্রামের বাড়িতে। মৃত ছাত্রীর গ্রামের বাড়ি মালদহের কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের রাজনগর এলাকায়। তারপরে আত্মীয় পরিজনদের উপস্থিতিতে রাজনগর শ্মশানেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বহরমপুরের গার্লস কলেজের ছাত্রী সুতপা চৌধুরী মালদা শহরের এয়ারভিউ কমপ্লেক্সের বাসিন্দা। ওই ছাত্রী সোমবার পথ চলতি মানুষের সামনেই ভর সন্ধ্যায় তার প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীর হাতে বহরমপুর গোরাবাজার এলাকায় নৃশংস ভাবে খুন হন। ওই ছাত্রীর মা পাপরি চৌধুরীর অভিযোগ, তার মেয়ে সুতপা চৌধুরীকে প্রায়ই নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতো সুশান্ত। এছাড়াও তার প্রেম প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তাকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় কম্পিউটার সাইন্সের স্নাতকোত্তর বিভাগের ছাত্র সুশান্ত চৌধুরী। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েকবছর যাবত প্রেমের সম্পর্ক ছিল সুশান্ত ও সুতপার। কিন্তু সুতপার পরিবার এ সম্পর্ককে মেনে নেয়নি। তারপরে স্থানীয় কাউন্সিলরের তত্ববধানে একটি সালিশি হয় এবং সেই সালিশি সভায় দুইজন একে অপরের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার কথা জানায়। সুশান্তের ল্যাপটপে থাকা দুজনের ছবি সেই সময় ডিলিট করে ফেলা হয়। পরবর্তীতে সুতপা এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসলেও সুশান্ত সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। এরপরে সুশান্ত সুতপার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে বারবারই প্রত্যাখিত হতো। যার ফলে পরিবারের লোকেরাও তার ব্যবহারে অসামঞ্জস্য লক্ষ করেছিল। 

সোমবার সন্ধ্যায় সুতপাকে গোরাবাজারে একা পেয়ে পথচলতি মানুষের সামনেই গুলি করে সে এবং এর পরেই তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর এক কোপ দেয় সুশান্ত। এদিকে তার হাতে বন্দুক ও ধারালো অস্ত্র থাকায় পথ চলতি কেউই তার ধারে কাছে ঘেঁষতে সাহস পায়নি। এদিকে ঘটনার পরেই সে এলাকা ছাড়া হয়। 

অন্যদিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। ঘটনার তিন ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ অভিযুক্তকে সামসেরগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

এহেন ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ওই ছাত্রীর মা ও আত্মীয় পরিজনরা অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।